বাড়ির পছন্দের পাত্রকে প্রত্যাখ্যান করে অন্য ধর্মে বিয়ে, নদিয়ায় মেয়ের শ্রাদ্ধ করে পড়শিদের খাওয়াল পরিবার!

By Sk Sakib

Published on:

নিজের পছন্দে বিয়ে, ঘটা করে ‘শ্রাদ্ধ’—জীবিত মেয়েকে মৃত ঘোষণা করল পরিবার

নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের খাটুরা উত্তরপাড়া এলাকায় ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। কলেজের প্রথম বর্ষে পড়া এক তরুণী নিজের পছন্দ অনুযায়ী অন্য ধর্মের এক যুবককে বিয়ে করেন। এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই তরুণীর পরিবার তাঁকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করে এবং ধর্মীয় রীতি মেনে তাঁর শ্রাদ্ধশান্তি অনুষ্ঠানও সম্পন্ন করে।

জানা গেছে, তরুণীর পরিবার তাঁর জন্য পাত্র খুঁজছিল। বিয়ের কথাবার্তা অনেকটাই এগিয়েও গিয়েছিল। কিন্তু তরুণী নিজের মতামত স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন যে, তিনি পছন্দের পুরুষকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করবেন। শেষমেশ তিনি বাড়ির সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে বিয়ে করে ফেলেন। সেই সিদ্ধান্তের পরই মেয়েকে সমাজ ও পরিবারের ‘বহিষ্কৃত’ করে দেয় পরিবার।



পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তরুণীর বাবা কর্মসূত্রে ইজরায়েলে থাকেন। মেয়ের এমন সিদ্ধান্তে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও মেয়েকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে দেন। তরুণীর ছবি, জামাকাপড়, বইপত্র এমনকি ব্যক্তিগত নথিও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর পরিজনদের ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়—এই মেয়ে তাঁদের জীবনে আর নেই।



তরুণীর কাকা সোমনাথ বিশ্বাস বলেন, “ওকে একবার ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু আবার পালিয়ে গেছে। এবার আর ক্ষমা করা যায় না।” তিনি আরও জানান, “পুরোহিত ডেকে নিয়ম মেনে শ্রাদ্ধ করেছি। মেয়েটা আমাদের সম্মান করেনি, তাই আমরাও তাকে সমাজ থেকে মুছে ফেলেছি।”



পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মেয়ের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার ১২তম দিনেই ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। পুরুষ সদস্যরা মাথা মুড়িয়ে পূজা দেন, এবং আত্মীয়দের খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করা হয়। তরুণীর মা জানান, “মেয়ে আমাদের অসম্মান করেছে। আমরা এই কাজের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছি।”



এই ঘটনাটি এলাকায় আলোড়ন ফেলেছে। কেউ কেউ অবাক, কেউ বা দুঃখিত। আবার কেউ প্রশ্ন তুলেছেন—এই ধরনের প্রতিক্রিয়া কি আদৌ সমর্থনযোগ্য?