তাঁকে চিনতে আমাদের বিশেষ কষ্ট হয় না—বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম পরিচিত মুখ, যিনি সঞ্চালিকা হিসেবে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর দর্শকদের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে অভিনেত্রী ও সঞ্চালিকা সুদীপা চট্টোপাধ্যায়-এর। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি সঞ্চালনার জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এক অনন্য উচ্চতায়।
দীর্ঘদিন ধরে রান্নাঘর অনুষ্ঠানে তাঁর সঞ্চালনা মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। রান্না ও খাওয়া-দাওয়া নিয়ে তাঁর জ্ঞানও অসাধারণ। শুধু তাই নয়, তাঁর নিজস্ব রেস্তোরাঁও রয়েছে। খাদ্যরসিক এই অভিনেত্রীই প্রতি বছর ঘরে মাতৃ আরাধনা করে থাকেন।
পরিচালক অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়ের সহধর্মিণী সুদীপা, এবং অগ্নিদেবের আদি বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকায়—যেখানে পুজোর ইতিহাস ১৫০ বছরেরও বেশি পুরনো। যদিও গত প্রায় এক দশক ধরে কলকাতার বাড়িতেই মহাসমারোহে মাতৃ আরাধনা করে চলেছেন তাঁরা। চার দিনব্যাপী এই পুজোয় টলিপাড়ার বহু পরিচিত মুখের আনাগোনা থাকে।
এই বাড়ির পুজোর অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ ‘ভোগ’। আর অষ্টমীর সন্ধি পুজোর পর থেকে মায়ের ভোগে নিবেদন করা হয় আমিষ পদ! গঙ্গা-পদ্মার ইলিশ থেকে শুরু করে কাজরী মাছের চচ্চড়ি—সবই থাকে সেই তালিকায়। তবে যার কথা না বললেই নয়, সেটি হলো একেবারে বিশেষ উপায়ে রান্না করা নিরামিষ পাঁঠার মাংস।
সম্প্রতি এই ভোগের বিশেষ মাংসের রেসিপি নিজেই শেয়ার করেছেন সুদীপা। শুরুতেই কচি পাঁঠার মাংসকে নুন, হলুদ, দই ও সর্ষের তেল দিয়ে ম্যারিনেট করে রেখে দিতে হয় এক ঘণ্টা। এরপর কড়াইয়ে গরম সর্ষের তেলে ফোড়ন হিসেবে পড়ে গোটা গরম মশলা, তেজপাতা, গোটা জিরে।
তার সঙ্গে মিশে যায় আদা, শুকনো লঙ্কা, জিরে এবং কাঁচা হলুদের বাটা। মশলা থেকে তেল ছেড়ে দিলে তাতে দেওয়া হয় মাংস এবং ঘি ও গোলমরিচ বাটা। সেদ্ধ করার সময় গরম জল দিয়ে রান্না এগোয়। কিন্তু আসল টুইস্ট আসে রান্নার শেষে—নামানোর আগে মাংসের ঝোলে যোগ করা হয় গোবিন্দভোগ চাল বাটা।
কেন? সুদীপা জানিয়েছেন, পেঁয়াজ-রসুন ছাড়া রান্না হওয়ায় মাংসের গন্ধ দূর করতে ও অতিরিক্ত সুগন্ধ দিতে এই চাল বাটা অত্যন্ত কার্যকর। একইসঙ্গে এটি ঝোলকে দেয় প্রয়োজনীয় ঘনত্ব।এইভাবেই এক অনন্য পদ্ধতিতে রান্না হয় চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর ভোগের মাংস, যার স্বাদ শুধু শরীর নয়, মনকেও তৃপ্ত করে।